ওয়েবসাইট থেকে আয় |
ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবেনঃ
বর্তমান সময়ে অর্থাৎ ২০২১ সালে এসে অনলাইনে কাজ করে টাকা আয় করাটা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষ তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে অনেক উপায়ে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করে থাকে। আপনিও চাইলেও শত উপায়ে অনলাইন থেকে লাখ টাকা আয় করতে পারেন। আজকের এই ব্লগে আপনাদের সাথে ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করতে হয় বা করা যায় এই নিয়ে আলোচনা করব!
ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে / কত উপায়ে ইনকাম হয়ঃ
আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনি উক্ত ওয়েবসাইট থেকে অনেক উপায়ে ইনকাম করতে পারেন। তার মধ্যে সব থেকে বেশি ও জনপ্রিয় হলো গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম করা।
নিচে গুগল এডসেন্স ছাড়াও অন্য কি কি উপায়ে আপনি একটি সাইট আয় করতে পারেন তা দেয়া হলোঃ
গুগল এডসেন্স
কাস্টম এড
নিজের বা সার্ভিস বিক্রি করা
পার্টনারশিপ এড
এফিলিয়েট মার্কেটিং
রেফার করা
ইত্যাদি
গুগল এডসেন্সঃ
গুগল এডসেন্স পৃথিবীর সবথেকে বড় ও জনপ্রিয় এডভারটিসমেন্ট কোম্পানী। আপনার সাইটে যখন কয়েকটি পোস্ট করবেন এবং উক্ত পোস্ট গুলো যখন রেংক করবে তখন আপনি আপনার সাইটের গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন। কিছুক্ষন বা কিছুদিনের মধ্যে গুগল আপনার সাইট কে রিভিউ করে দেখবে আপনার সাইট এডসেন্স পাওয়ার যোগ্য কি না! যদি আপনি ইউনিক এবং এডসেন্স ফ্রেন্ডলী পোস্ট করবেন তখন এমনিতেই আপনি এডসেন্স এর এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।তারপর এডসেন্স থেকে পাওয়া কোড আপনার সাইটে বসিয়ে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন। আপনাকে শুধু এডসেন্স হতে কোড এনে ব্লগে বসাতে হবে। গুগল এডসেন্স এর এপ্রুভাল পাওয়ার পর আপনি আপনার সাইটে নিয়মিত পোস্ট করবেন এর পোস্টের মধ্যে গুগল এডসেন্স থেকে পাওয়া কোড বসাবেন। আপনার সাইটে যত ভিসিটর আসবে আপনার আয় তত বেশী হবে।
গুগল এডসেন্স হতে কত টাকা আয় সম্ভবঃ
গুগল এডসেন্স থেকে সর্বোচ্চ আয়ের কোনো লিমিট নেই। আপনি এক মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। আপনার ভিসিটর যত বেশী হবে আপনার আয় তত বেশী হবে।
কিভাবে ইনকাম হয়ঃ
ধরুন বাংলাদেশের দারাজ গুগল এডস এর মাধ্যমে তাদের পণ্য গুলো প্রমোট করতে চাচ্ছে। তারা গুগল কে টাকা দিয়ে বলবে আমার এই সার্ভিস বা পণ্য কে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌছে দিবেন। তখন গুগল কি করবে তারা যাদের কে এডসেন্স এপরুভাল দিয়েছে তাদের সাইটে দারাজের এড বা বিজ্ঞাপন দেখাবে। এই বিজ্ঞাপনে মাধ্যমে দারাজ / গুগল / ওয়েবসাইট এর মালিক আয় করতে পারবে।
যেমন, বিজ্ঞাপনের ফলে দারাজের পণ্য বিক্রি হবে/ দারাজ যে টাকা গুগল কে দিল উক্ত টাকার কিছু অংশ গুগল নিবে বাকী কিছু অংশ ওয়েবসাইটের মালিককে দিবে । কারণ উক্ত সাইটের মাধ্যমেই তারা এড দেখিয়েছে। এইভাবে সাধারণত এডসেন্স থেকে আয় হয়।
কিভাবে পেমেন্ট পাবেনঃ
ইম্প্রেশন সিপিসি ও ক্লিকের উপর নির্ভর করে কত টাকা পাবেন। এডসেন্স এর টাকা সরাসরি ব্যাংক এ নিতে পারবেন।
এডসেন্স থেকে আয় করতে চাইলে সবসময় ইউনিক কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে এবং কোনো সময় নিজের এডে { গুগল থেকে দেয়া এড} ক্লিক করা যাবেনা।
কাস্টম এড থেকে ইনকামঃ
কাস্টম এড বলতে নিজের মত করে এড বানিয়ে সাইটে দেয়া। আপনার সাইটে এডসেন্স এর পাশাপাশি কাস্টম এড লাগিয়েও টাকা আয় সম্ভব। আপনি আপনার সাইটে বিভিন্ন কোম্পানীর এড লাগিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিতে পারেন।
কিভাবে পেমেন্ট পাবেনঃ
কাস্টম এড এর টাকা আপনার কন্টাক্ট অথবা সেলের উপর নির্ভর করে দেয়া হবে। সেই টাকা আপনাকে হাতে / বিকাশে / ব্যাংকে / চেকের মাধ্যমে দিয়ে থাকে।
নিজের পন্য বা সার্ভিস থেকে আয়ঃ
আপনার সাইটে আপনি আপনার কোনো পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করেও আয় করতে পারেন। যেমন, আপনার সাইটে আপনি যেকোনো বিষয়ের উপর একটি আর্টিকেল লিখলেন। এর পাশাপাশি আপনি আপনার পণ্য বা সার্ভিস নিয়েও কিছু লিখলেন এবং উক্ত পণ্য বা সার্ভিস টি কেনার লিংক করে রাখলেন। দেখে গেল অনেকেই আপনার সাইট থেকে সার্ভিস টি কিনে নিল এবং আপনি আয় করলেন। সেটা হতে পারে কোনো সোর্স কোড / কাপড় / মোবাইল ইত্যাদি।
পেমেন্ট কিভাবে পাবেনঃ
যেহেতু আপনি পন্য বা সার্ভিস বিক্রি করবেন তাই আপনাকে পেমেন্ট গেটওয়ে কানেক্ট করে রাখতে পারবে। এই টাকা আপনি সরাসরি বিকাশ মার্চেন্ট পেমেন্ট অথবা অন্য কোন একাধিক পেমেন্ট সেবা সাপোর্ট করে তাদের মাধ্যমে নিতে পারেন। তারাও আপনাকে ব্যাংকে পেমেন্ট করবে। এই ভাবে কত আয় করবেন সেটা নির্ভর করে সেলের / বিক্রির উপর।
পার্টনারশীপ এডঃ
এটা হলো আপনি কোনো কোম্পানির সাথে চুক্তির মাধ্যমে তাদের এড আপনার সাইটে দেয়া। নগদ তাদের কিছ কাস্টমাইজড এড দিবে আপনি আপনার ব্লগে দেওয়ার জন্য। এটা সাধারণত বেশি ভিজিটর হলে এই পার্টনারশীপ এড আপনাকে দেয়া হবে।
পেমেন্ট কিভাবে পাবেনঃ
তারা আপনাকে প্রতি আর্টিকেল এবং ভিজিটরের উপর পেমেন্ট করবে। তারা সাধারণত মাসিক ভিত্তিতে আপনাকে ব্যাংকে পেমেন্ট করবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
আপনার পোস্ট কোনো পণ্য নিয়ে হলে অথবা যেকোনো পোস্টে আপনার এফিলিয়েট লিংক / ব্যানার দিয়ে রাখতে পারেন। কেউ উক্ত লিংক থেকে পণ্য নিলে আপনাকে কমিশন দেয়া হবে।
আপনি আমাজন / ব্ল হোস্ট সহ বিভিন্ন সাইটের এফিলিয়েট লিংক নিয়ে কাজ করতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
পেমেন্ট কিভাবে পাবেনঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন এটা নির্ভর করে আপনার লিংক থেকে কত মানুষ উক্ত পণ্য বা সার্ভিস টি কিনল।
আপনি যদি বাংলাদেশের কোনো সাইটের এফিলিয়েট করেন তাহলে বিকাশ / ব্যাংকে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
যদি, আপনি ইন্টারন্যাশনাল সাইটে এফিলিয়েট মার্কেটিং করেণ তাহলে আপনাকে পেপাল / পেওনিয়ার সহ ব্যাংক এ পেমেন্ট করে থাকে।
রেফার করাঃ
এটা অনেক টা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতই। আপনি কোনো সাইটের রেফার লিংক শেয়ার করলেন আপনার সাইটে।কেউ উক্ত লিংক থেকে একাউন্ট খুলল । এখন আপনি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা বোনাস পাবেন। যেমন, আপনি বিকাশ এর রেফার লিংক আপনার ব্লগে শেয়ার করলেন। এখন এই লিংক থেকে কেউ বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে একাউন্ট খুলল। এখন আপনি ১০০ টাকার মত বোনাস পাবেন।
কিভাবে বোনাস / পেমেন্ট পাবেনঃ
রেফার করা টাকা আপনাকে আপনার একাউন্ট এর ব্যালেন্স এ দেয়া হবে। যদি বিকাশ অ্যাপ রেফার করে থাকেন তাহলে আপনাকে আপনার বিকাশ একাউন্টে বোনাস এর টাকা দেয়া হবে।
আশা করি আপনাদের কাছে এতটুকু ব্লগ ভালো লেগেছে!
কিভাবে ওয়েবসাইট খুলবেঃ
আপনি বিভিন্ন মাধ্যমে ওয়েবসাইট খুলতে পারেন।
বর্তমানের কয়েকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট বিল্ড করার সাইট দেখাবঃ
Blogger.com {ব্লগার}
Wordpress.com {ওয়ার্ডপ্রেস}
Wix.com {ওয়িক্স}
উপরে দেয়া যেকোনো মাধ্যমে আপনি ব্লগ খুলে আর্টিকেল লিখে টাকা আয় করতে পারেন।
ব্লগারে আপনি খুব কম খরচে সম্পূর্ন সাইট রেডি করে ফেলতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে আপনি প্রফেশনাল সাইট বানাতে পারবেন তবে, এতে আপনার হোস্টিং + ডোমেইন বাবদ ব্লগার থেকে বেশী টাকা খরচ করতে হবে। নতুন হিসেবে আমি আপনাকে সাজেস্ট করব ব্লগার দিয়ে ফ্রিতে শুরু করে পরে না হয় ওয়ার্ডপ্রেস এ শিফট করবেন।
এই নিয়ে এবং কিভাবে ওয়েবসাইট খুলতে হয় পরবর্তী ব্লগে আরো আলোচনা করব। আমাদের সাথেই থাকুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
কোনো কিছু জানার বা অভিযোগ থাকলে নিচে কমেন্ট করুন